ইদানিং বাণিজ্যিকভাবে বেলি ফুল চাষ হচ্ছে দেশে। শুধু সৌন্দর্য বর্ধনই নয়, এটি এখন অর্থকরী ফুল।
বাংলাদেশে (খয়েবেলী ও রাইবেলী) সিঙ্গেল ও তীব্র সুগন্ধীযুক্ত, ( মতিয়াবেলী) মাঝারি আকার ও ডবল এবং (ভরিয়াচেলী) বৃহদাকার ডবল এ ৪ জাতের বেলি ফুল দেখা যায়।
আজ আমরা এই নিবন্ধে সহজ উপায়ে কিভাবে বেলি ফুলের চাষ করবেন তা নিয়ে আলোচনা করব।
যেভাবে বেলি ফুল চাষ করবেন, জেনে নিন সঠিক পদ্ধতি
বেলি ফুল চাষ সুনিষ্কাশিত সব ধরনের মাটিতে করা যায়; তবে বেলে মাটি ও ভারী এঁটেল মাটিতে তেমন ভালো জন্মেনা। এছাড়া জৈব পদার্থযুক্ত দোআঁশ মাটির সাথে পরিমাণমতো ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি সার মিশিয়ে টবে বেলি ফুলের চাষ করা যায়।
জমি ও চারা তৈরি এবং রোপন পদ্ধতি
মূলত বেলি ফুল গুটি কলম, ডাল কলম ও দাবা কলম পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করে। তবে চারা বা কলম তৈরি করতে হয় গ্রীষ্মের শেষ হতে বর্ষার শেষ পর্যন্ত সময়ে। ভালো সেচ ব্যবস্থা থাকলে বসন্তকালেও কলম তৈরি করা যাবে।
- এছাড়া বেলি ফুলের চাষাবাদের জমি বা মাটি ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরা করে তৈরি করতে হবে।
- জমি তৈরির সময় জৈব সার, ইউরিয়া, ফসফেট এবং এমপি দিতে হয়।
- চারা লাগানোর গর্তের মাটির সাথে রোদ খাইয়ে, জৈব সার ও কাঠের ছাই মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে।
- এরপর প্রতি গর্তে বেলির কলম বসাতে হবে; কলম বর্ষায় বসানো উত্তম।
- চারা রোপণ করতে হবে ১ মিটার অন্তর অন্তর।
- চারা থেকে চারা ও সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৫০ সেন্টিমিটার।
- চারা লাগানোর পর ইউরিয়া প্রয়োগ করে পানি সেচ দিতে হবে।
বেলি ফুল গাছের পরিচর্যা ও সেচ
বেলি ফুল ক্ষেতে সব সময় রস থাকা প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে ১০-১২ দিন এবং শীতকালে ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর ও বর্ষাকালে সময়মতো বৃষ্টি না হলে জমির অবস্থা বুঝে ২-১টি সেচ দিতে হবে। এছাড়া …
- বেলি ফুল বাগান বা টবে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কারের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- এই ফুল বাগানের জমিতে খড় কেটে কুচি করে বিছিয়ে রাখলে সেচের প্রয়োজন কম হয় এবং বেশি আগাছাও জন্মাতে পারে না।
- বেলি ফুলের গাছের ডালপালা প্রতি বছরই ছাঁটাই করা জরুরী; তবে শীতে ডাল ছাঁটাই করা উত্তম।
- এছাড়া মাটির উপর থেকে ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উপরে গাছ ও ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে।
- গাছ ও ডালপালা ছাঁটাইয়ের কয়েক দিন পর বাগানে বা টবে সার দিতে হবে।
রোগবালাই দমন
বেলি ফুল বাগানে ক্ষতিকারক কীট-পতঙ্গের উপদ্রব নেই বললেই চলে। তবে মাঝে মাঝে মাকড়ের আক্রমণ হতে পারে।
মাকড়ের আক্রমণে পাতায় সাদা আস্তরণ পড়ে, আক্রান্ত পাতাগুলো কুঁকড়ে যায় ও গোল হয়ে পাঁকিয়ে যায়। আক্রমণ বেশি হলে গন্ধক গুঁড়া, গন্ধকঘটিত বা অন্য মাকড়নাশক স্প্রে করতে পারেন।
এছাড়া বেলি ফুল গাছের পাতায় হলদে বর্ণের ছিটে ছিটে দাগযুক্ত এক প্রকার ছত্রাক আক্রমণ করে। এ রোগ দমনে এগ্রোসান বা ট্রেসেল-২ প্রয়োগ করতে হবে।
ফলন
বেলি ফুল গাছে ফেব্রুয়ারি – জুলাই পর্যন্ত ফুল ফুটে; লতানো বেলিতে ফলন ভালো হয়। সাধারণত ৫ থেকে ৬ বছর পর পূরানো গাছ কেটে ফেলে নতুন চারা রোপণ করা উত্তম।
–লেখাটির বিভিন্ন তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস ও অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বগ্লে প্রকাশিত কোনও তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
আরো পড়ুন …
- আধুনিক পদ্ধতিতে গোলাপ ফুল চাষ
- সহজ ও সঠিক গাঁদা ফুল চাষ পদ্ধতি
- জেনে নিন সঠিক অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি
- সহজ ডাটা শাক চাষ পদ্ধতি
- সহজে আনারস চাষ করবেন যেভাবে
- পান চাষ, জেনে নিন চাষাবাদ পদ্ধতি ও পরিচর্যা
**চাষাবাদ ও কৃষি সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, খবর পড়তে আজই জয়েন করুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ ” বীজ ঘর ( কৃষি কথা )” হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ” বীজ ঘর ( কৃষি কথা )” অথবা টেলিগ্রাম চ্যানেল ”বীজ ঘর ( কৃষি কথা )’‘ এ।