তীব্র শীতে সবজি চাষ, করণীয় ও স্প্রে সিডিউল

তীব্র শীতে সবজি চাষ। শীতে বা পোকার আক্রমণে শাক-সবজির চাষাবাদ যাতে নষ্ট না হয়; সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

শাক-সবজির জন্য শীতকালই উত্তম সময়। তাই এ মৌসুমে শাক-সবজির যত্ন নিতে হবে বেশি বেশি।

এদিকে তীব্র শীতে; নিম্ন তাপমাত্রা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আলু, টমেটো, কপি এবং কাঁচা মরিচ গাছ সহ বিভিন্ন শাক-সবজি রোগে আক্রান্ত হয়।

তাই কৃষি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এসব ফসল রক্ষায় বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

তীব্র শীতে সবজি চাষ এ করণীয়

তীব্র শীতে শাক-সবজির চাষাবাদে করণীয় ও স্প্রে সিডিউল সম্পর্কে নিম্নের পরামর্শ গুলো দিয়েছেন মো: সালেক হোসাইন, সিনিয়র রিসার্চার, এ আর মালিক সীডস প্রা: লি:।

  • প্রথমত প্রচণ্ড শৈত প্রবাহের মধ্যে বীজ বপন না করা।
  • জানুয়ারির শেষে (ট্রেতে বীজ বপন) বা ফেব্রুয়ারিতে মাচা সবজির বীজ বপন করা।
  •  চারা গজানোর/ ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর প্রথমত চারার গোড়া পচা রোগ/ Damping off থেকে রক্ষা পেতে কার্বেন্ডাজিম (১গ্রাম/ লি) গ্রুপের ওষুধ প্রয়োগ করা।
  •  চারা ৪/৫ পাতা হয়ে গেলে নরমাল ম্যানকোজেব (১-২ গ্রাম/লি) সাথে ইমিডাক্লোরোপিড অথবা ক্লোরপাইরিফস+ সাইপারমেথ্রিন ( ০.৫-১ মিলি/লি) গ্রুপের ওষুধ প্রয়োগ করা।

( চারা ছোট অবস্থায় অর্ধেক ডোজ প্রয়োগ করতে হবে) যা জাব পোকা, লেদা পোকা বা কাটুই পোকার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করবে।

  •  চারার বয়স ১৫-২০ দিন হয়ে গেলে সারের টপ ড্রেসিং বা উপরি প্রয়োগ দেয়া।
  • এসময় জমিতে সম্ভব হলে হলুদ আঠালো ফাঁদ এবং ফেরোমন ফাঁদ জৈব বালাইনাশক হিসেবে স্থাপত করা।
  •  সপ্তাহে দুইদিন ইমিডাক্লোরোপিড (১ মিলি/ লি) ও ম্যানকোজেব (১-২ গ্রাম/ লি)এর সিডিউল স্প্রে প্রয়োগ করা।
  • গাছে ফুল আনা তরান্বিত করতে মাইক্রোনিউট্রেন্ট ফ্লোরা (২-৩ গ্রাম /লি) প্রয়োগ করা।
  •  চারার বয়স ৩৫-৪০ দিনে আবার সারের দ্বিতীয় টপ ড্রেসিং বা উপরি প্রয়োগ দেয়া।
  • এ সময় সার প্রয়োগের পর পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া বা গাছে আঠা ঝরা রোগের প্রকোপ দেখা দিলে কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের ওষুধ (২-৩ গ্রাম/ লি) বা টেবুকোনাজল ও ট্রাইফ্লক্সিসট্রবিন গ্রুপের ওষুধ (০.৫ গ্রাম/ লি) হারে প্রয়োগ করা।
  • গাছের ৪৫- ৫০ দিনের মধ্যে গাছে চিলেটেড জিংক +১গ্রাম/লি) ও সলুবোর বোরন ( ২ গ্রাম/ লি) হারে প্রয়োগ করা। যা গাছে ফুল ফল আনতে, গাছ সতেজ রাখতে এবং ফল ঝরা কমাতে সহায়ক হবে।
  •  সপ্তাহে দুইদিন ( ফুল ফল ধরার পর থেকে) সাইপারমেথ্রিন/ স্পিনোস্যাড/ আইসোপ্রোক্যাব ( ১ মিলি/ লি) ও ম্যানকোজেব (২ গ্রাম/ লি) এর সিডিউল স্প্রে প্রয়োগ করা এবং গাছের বয়স শেষ অবদি সিডিউল স্প্রে ফলো করা।

এসব প্রয়োগের ফলে জাব পোকা, থ্রিপিস, ফল ছিদ্রকারী মাছি পোকার আক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করবে।

  • গাছ বেশি দিন জমিতে ধরে রাখতে ও কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে ৬৫/ ৭০ দিন বয়সে সারের তৃতীয় টপ ড্রেসিং বা উপরি প্রয়োগ দেয়া।

শেষ কথা

আবহাওয়া ও তাপমাত্রার তারতম্য ভেদে স্প্রে সিডিউল এর পরিবর্তন হতে পারে। এজন্য নিকটস্থ কৃষি অফিস বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

বগ্লে প্রকাশিত কোনও তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।

আরো পড়ুন … 

**চাষাবাদ ও কৃষি সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, খবর পড়তে আজই জয়েন করুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ ” বীজ ঘর ( কৃষি কথা )”  হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ” বীজ ঘর ( কৃষি কথা )” অথবা  টেলিগ্রাম চ্যানেল  ”বীজ ঘর ( কৃষি কথা )’‘ এ। 

মতামত দিন

Item added to cart.
0 items - 0.00
Need Help?